৬:১৮ অপরাহ্ণ, জুন ২২, ২০২২
নিজস্ব প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার (২২ জুন) দুপুরে নতুন অর্থ বছরের জন্য ১১৫ কোটি ৮ লাখ ৮৩ হাজার ৯২৬ টাকার বাজেট ঘোষণা করেন পৌর মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া।
তিনি জানান, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের জন্য প্রণীত বাজেটের রাজস্ব খাতে আয় ধরা হয়েছে ৪৩ কোটি ৯৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। উন্নয়ন খাতে আয় ধরা হয়েছে ৭০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। প্রারম্ভিক স্থিতি ৮৫ লাখ ৩৩ হাজার ৯২৬ টাকাসহ সর্বমোট আয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি ৮ লাখ ৮৩ হাজার ৯২৬ টাকা। নতুন অর্থ বছরের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৪ কোটি ৭২ লাখ ৩২ হাজার ৩০০ টাকা। উদ্ধৃত ধরা হয়েছে ৩৬ লাখ ৫১ হাজার ৬২৬ টাকা।
বাজেট অনুষ্ঠানে পৌর মেয়র তার ৫-৬ মাসের মেয়াদকালে বাস্তবায়িত কাজের তালিকা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এটি লক্ষ্মীপুর পোরসভার ৪৫ তম বাজেট। বর্তমান পরিষদের প্রথম বাজেট। প্রায় ৩০ কোটি টাকার দায়-দেনা নিয়ে আমি বর্তমান পরিষদের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। পৌরসভার চারটি পানির ট্রিটমেন্ট প্লান্টের জন্য প্রতিমাসে ৩০ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হয়। বিভিন্ন সেবা এবং বেতনভাতা মিলিয়ে মাসে প্রায় কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। নতুন অর্থ বছরে বাজেটে যে করারোপ করা হয়েছে তা সহনশীল পর্যায়ে রেখেছি। পৌরবাসীর ধার্যকৃত বাৎসরিক হোল্ডিং কর মাত্র ২ কোটি ৮ লাখ টাকা। যা দিয়ে পৌরসভার দুই মাসের ব্যয়ের সংকুলন হয় না।
বলেন, এই বিশাল দায়-দেনা, কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের পাশাপাশি নাগরিক সেবা ও পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করা কতটুকু কষ্টকর হবে তা আমার চেয়ে আপনারা ভালো বুঝেন। তবে আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা ও আমার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পৌরবাসীর সেবা সুনিশ্চিত করার দৃঢ় মনোভাব রয়েছে।
পূর্বের পরিষদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, পৌরসভা দায় দেনার পাহাড় দেখে অনেকটা বিচলিত হয়ে পৌরবাসীর সেবা ও উন্নয়নে আমার দেওয়া নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের দিক বিবেচনা করে বিভিন্ন দফতর ও প্রকল্পের কার্যালয়ে হন্যে হয়ে দিনের পর দিন সময় দিয়ে আসছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশ উন্নয়নে যে আন্তরিক প্রদক্ষেপ নিয়েছে তা আমি সরাসরি অনুধাবন করেছি। তবে বিগত পরিষদ যথাযথ প্রদক্ষেপ ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ে সঠিক সময়ে ধর্না দিলে পৌরসভা ও পৌরবাসীর অনেক উন্নয়নমূলক প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতে পারতো। কিন্তু বর্তমানে নতুন করে প্রকল্পে অন্তভূক্তির ক্ষেত্রে অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমি মন্ত্রী মহোদয় ও এমপি মহোদয়দের সার্বিক সহযোগিতায় পৌরবাসীর সেবা উন্নয়নে ঐক্যান্তিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।
বলেন, জেলা সদরের ১ম শ্রেণীর পৌরসভা হওয়া স্বত্ত্বেও পৌরসভার নিজস্ব কোন ভবন নেই। এতে জনগণকে প্রতিনিয়ত নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয়। ভবন করার মতো পৌরসভার নিজস্ব কোন ভূমি নেই। এছাড়া পরিচ্ছন্ন কর্মীদের আবাসন প্রকল্প থেকে ৭ তলা বিশিষ্ট ৩৬ টি ফ্লাটের একটি ভবন বরাদ্দ হয়েছে, নতুন একটি পানির ট্রিটম্যান্ট প্লান্টের জন্য ৩২ কোটি টাকা একনেকে পাশ হয়েছে। কিন্তু নিজস্ব ভূমির অভাবে এগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য প্রায় ৫ একর ভূমির প্রয়োজন। এমন পরিস্থিতিতে আমাদেরকে একটু বেগ পেতে হচ্ছে। আমরা ভূমি ক্রয়ের প্রদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। আমার মেয়াদকালে পৌরসভাকে নতুন একটি ভবন উপহার দিতে পরবো বলে আশাবাদি।
পৌর মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক এমপি মোহাম্মদ উল্যা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ নূর-এ-আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) পলাশ কান্তি নাথ, রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এম আলাউদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম, লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি হোসাইন আহম্মদ হেলাল প্রমুখ।
১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, মে ১৩, ২০২৩
১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ, মে ১২, ২০২৩