১:১৫ পূর্বাহ্ণ, এপ্রি ২৭, ২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার : লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন জাহানের বিরুদ্ধে কর্মচারীদের মারধর ও নির্যাতন নিপীড়ন চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে গৃহপরিচারিকা (পরিচ্ছন্নতা কর্মী) জাহানারা বেগম ও দারোয়ান কাম কেয়ারটেকার আবদুল কাদের সাংবাদিকদের নিকট এ অভিযোগ করেন।
লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের কর্মচারীদের অভিযোগ জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর শারমিন জাহান লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এরপর থেকে অধিনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কারনে অকারনে খারাপ ব্যবহার করেন। তিনি কথায় কথায় অধিনস্ত কর্মচারীদেরকে মারধর ও নির্যাতন-নিপীড়ন চালান। অভিযোগ রয়েছে, শারমিন জাহানের অসদাচরণ ও মারধরের ভয়ে কয়েকজন কর্মচারী একদিন জেলা পরিষদ ছেড়ে পালিয়ে বেড়িয়ে নিজেদের আত্মসম্মান রক্ষা করেন।
পরিচ্ছন্নতাকর্মী জাহানারা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি প্রায় ২ বছর ধরে মাস্টাররোলে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহীর বাসভবনে গৃহপরিচারিকার কাজ করে আসছি। আগে কোন স্যার আমার সাথে খারাপ আচরণ করেননি। কিন্তু শারমিন জাহান ম্যাডাম আসার পর থেকেই কাজে ভুল হওয়ার অভিযোগ তুলে আমার সাথে প্রতিদিন খারাপ ব্যবহার করেছেন। ১০-১২ দিন আগে প্রতিদিনের মত সকালে শারমিন জাহান ম্যাডামের বাসায় কাজ করতে যাই। রুটি ও আলু ভাজি বেশী তৈরী করায় তিনি আমাকে লাথি-ঘুষি ও চুল টেনে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেন। পরে কান্নাকাটি করে আমি ওখান থেকে এসে জেলা পরিষদের অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, এর পরদিন সকালে আবার কাজ করতে গেলে শারমিন জাহান ম্যাডাম দাঁড়িয়ে থেকে আমাকে তার কাপড়ে মাড় দিতে বলেন। মাড় দেয়ার সময় তার কাপড়ে রঙ উঠে গেছে অজুহাতে তিনি প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে আমাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে আমার ঘাঁড় ধরে লাথি-ঘুষি দিয়ে আমাকে ফ্লোরে ফেলে দেন। এ সময় আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দও করেন। জাহানারা বেগম তার উপর নির্যাতন-নিপীড়নের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
জেলা পরিষদের দারোয়ান কাম কেয়ারটেকার আবদুল কাদের বলেন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন জাহান স্যার জেলা পরিষদে যোগদানের পর প্রশিক্ষণে যাওয়ার আগে একদিন উনার শাড়ি আয়রন করে দিয়েছি। পরে ব্লাউজ আয়রন করে আমি ভাঁজ করি। এতে কিছু না বলেই তিনি পেছন থেকে আমাকে থাপ্পড় দেন। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ব্লাউজ কেন ভাঁজ করেছি। এছাড়া খারাপ ভাষায় আমাকে গালাগাল করেন। এরপরও কয়েকবার তিনি আমার গায়ে হাত তুলেছেন। শুরু থেকেই তিনি আমার সঙ্গে কারনে অকারনে খারাপ ব্যবহার করেছেন।
এ সময় কাদের আরও বলেন, শুধু আমি নই, জেলা পরিষদের কোন কর্মচারী ম্যাডামের মারধর এবং গালমন্দ থেকে রেহাই পায়নি। তবে চাকরি হারানোর ভয়ে অনেকেই মুখ খুলতে চায়না বলে কাদের দাবি করেন।
এ ব্যাপারে মতামত জানতে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন জাহানের মোবাইলফোনে একাধিকবার কল করেও সাড়া মেলেনি।
লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, জাহানারাসহ দু’জন কর্মচারী তাদেরকে প্রধান নির্বাহী কর্তৃক মারধরের বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। আমি সঠিক বিচার করবো বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি। এ ঘটনাটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করবো। এ ধরণের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদে আর কখনো না ঘটে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, মে ১৩, ২০২৩
১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ, মে ১২, ২০২৩