২:২৭ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রু ২৬, ২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার :
লক্ষ্মীপুরে মো. মনির হোসেন (ইনডেক্স নং ৩১৮৭৩৭) নামের এক ব্যক্তি দুই পদে বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন। তিনি একই সাথে লক্ষ্মীপুর টিচার্চ ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ ও সদর উপজেলার খিলবাইছা রাহমানিয়া ফাযিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার বাংলা বিষয়ের প্রভাষক।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা এমপিও নীতিমালার ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বেতন-ভাতাদির সরকারি অংশ প্রাপ্তির জন্য শিক্ষক/কর্মচারীরা একই সঙ্গে একাধিক স্থানে চাকরিতে বা আর্থিক লাভজনক কোনো পদে নিয়োজিত থাকতে পারেন না।
অভিযোগে জানা যায়, মো. মনির হোসেন খিলবাইছা রাহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসার বাংলা বিষয়ের প্রভাষকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত লক্ষ্মীপুর টিচার্চ ট্রেনিং কলেজেরও অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। উভয় প্রতিষ্ঠান হতে তিনি যথারীতি বেতনসহ অন্য সুবিধা গ্রহণ করছেন।
একই সাথে তিনি আইন পেশায়ও নিয়োজিত রয়েছেন। মো. মনির হোসেন ইতোপূর্বে লক্ষ্মীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ছিলেন। কিন্তু একই সাথে দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকায় তিনি তার আইনজীবী তালিকাভূ্িক্ত সনদ লক্ষ্মীপুর বার থেকে পরিবর্তন করে বিগত ১৮/১০/২০১০ইং তারিখে ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতিতে সংযুক্ত করেন (ইইঊ/ঝঊঈ-০২/খধশংযসরঢ়ঁৎ- ২০৯/২০১০/২০৮৪) সে মোতাবেক তিনি ঢাকা আইনজীবী সমিতির একজন সদস্য হিসেবে ঢাকায় আইন পেশায় কর্মরত রয়েছেন। প্রায়ই তাকে ঢাকা যেতে হয় বিধায় তিনি বিএড কলেজ ও মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকেন।
মাদ্রাসার অভিভাবকগণ জানায়, বাংলা বিষয়ের প্রভাষক মো. মনির হোসেন নিয়মিত মাদ্রাসায় যান না, একদিন গিয়ে পুরো মাসের হাজিরা খাতায় এক সাথে স্বাক্ষর দিয়ে আসেন।
এছাড়াও তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত লক্ষ্মীপুর বি.এড কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সেখানেও তিনি একজন নিয়মিত চাকুরিজীবী হিসাবে সরকারি বেতন ভাতা উত্তোলন করেন। যাহা বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী বিধি বহির্ভূত এবং ইসলামী বিশ^বিদ্যালয় অধ্যাদেশ ২০০৬ এর ৭ (ট) বিধির সরাসরি লংঘন।
অভিভাবকগণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাংলা বিষয়ের প্রভাষক ক্লাসে টানা অনুপস্থিত থাকায় ২০১৮ইং সনে অনুষ্ঠিত আলিম পরীক্ষায় ২৯জন শিক্ষার্থী শুধু বাংলা বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে।
এদিকে মো. মনির হাসেন লক্ষ্মীপুর বিএড কলেজের অধ্যক্ষ পদে কর্মরত থাকলেও তিনি সেখানেও নিয়মিত উপস্থিত থাকেন না, যার কারণে শিক্ষার্থীরা বিএড প্রশিক্ষণে ভর্তি হয়েও কাঙ্খিত ফলাফল পাচ্ছেনা বলে জানা গেছে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ শিক্ষার মানোন্নয়নের স্বার্থে মনির হোসেনকে খিলবাইছা রাহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসা ও লক্ষ্মীপুর টিচার্চ ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান।
এ বিষয়ে খিলবাইছা রাহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. নুর হাসান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাংলা বিষয়ের প্রভাষক মো. মনির হোসেন মাদ্রাসায় নিয়মিত পাঠদান করেন না, এ কারণে ২০১৮ সনে বাংলা বিষয়ে ২৯জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়ে মাদ্রাসার সুনাম করেছে। এ ছাড়াও তিনি ঢাকা বার’র একজন আইনজীবী এবং লক্ষ্মীপুর টিচার্চ ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ায় সেদিকে সময় দেবার কারণে মাদ্রাসায় নিয়মিত উপস্থিত থাকতে পারেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেবার জন্য প্রভাষক মো. মনির হোসেনকে ফোন করলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় মতামত নেয়া যায়নি।
১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, মে ১৩, ২০২৩