• ঢাকা,বাংলাদেশ
  • বুধবার | ৩১শে মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | গ্রীষ্মকাল | রাত ৩:২৬
  • আর্কাইভ

লক্ষ্মীপুরে অবৈধ বাংলা ইটভাটার ছড়াছড়ি : আইন আছে প্রয়োগ নেই

১:৪৪ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রু ০৫, ২০১৮

নাজিম উদ্দিন রানা :
আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ না থাকায় লক্ষ্মীপুরে প্রতি বছরই জন্ম হচ্ছে নতুন নতুন বাংলা ইট ভাটার। এসব ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে গাছ পোড়ানোর কারণে ছোট বড় সব ধরনের বাগান উজাড় হয়ে যাচ্ছে। নানা জাতের গাছ নিধনের ফলে দীর্ঘ মেয়াদে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছে।

১২০ ফুট দীর্ঘ উঁচু চিমনির পরিবর্তে মাত্র ২০ ফুট বাংলা চিমনি ব্যবহার করায় ইটভাটার ধোঁয়া ও কালো ছাই বাতাসে কার্বনডাই অক্সাইড ছড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে পাশে অবস্থিত লোকালয়ে এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। অক্সিজেন সংকট এবং অতিমাত্রায় কার্বনডাই অক্সাইড গ্রহণের ফলে শিশু বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ শ্বাসকষ্ট, গলার প্রদাহ, পেটের পীড়া, এমনকি প্রাণঘাতী ফুসফুস ক্যান্সারের মত জটিল সকল রোগের আশংকা রয়েছে। একইভাবে আক্রান্ত হচ্ছে পশু পাখি, গাছপালা এবং কৃষকের উৎপাদিত ফসল ও অন্যদিকে কৃষিজমি হারাচ্ছে উর্বরতা। বাংলা ইটভাটার এসব মালিকরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নতুন নতুন এলাকায় ইটভাটা তৈরি করছে।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর উভূতি ও আঁধার মানিক নামক স্থানে অবাদে পরিবেশ দূষণকারী ইটভাটা স্থাপনের প্রতিযোগীতা গড়ে উঠেছে। এসব ইটভাটাগুলোতে বেশীর ভাগ জ্বালানো হচ্ছে নানা প্রজাতির বৃক্ষাধি। যাতে একদিকে কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষণ হচ্ছে অন্যদিকে নিধন হচ্ছে মূল্যবান গাছপালা আর জ্বলছে ফসলীয় জমিন। অভিযোগ রয়েছে ইটভাটা মালিক সমিতির যোগসাজসে পরিবেশ অধিদপ্তরের নোয়াখালী অঞ্চলের কিছু অসাধু কর্মকর্তা মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে বাংলা ইটভাটা স্থাপনে মালিকদের সহযোগীতা করেছে।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, আঁধার মানিক পূর্ব এলাকায় মেসার্স খোরশেদ এন্ড হুমায়ন ব্রিকস্ ম্যানুফ্যাকচারিং এ ফিল্ডে একটি বাংলা চিমনী ইটভাটা, এবং একই এলাকায় আধারমানিক নামক স্থানে একই নামে আরেকটি বাংলা ইটভাটা মোঃ খোরশেদ আলম এন্ড হুমায়ুন ব্রিকস্ নামের এই দুইটি বাংলা ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে একই মালিকের। এছাড়াও ঝাউডগি, চুট্রি ব্যাপারির দোকান থেকে উত্তর দিকে হাজীগঞ্জ সড়কে মেসার্স জননী ব্রিকস্ ম্যানুফ্যাকচারিং প্রোপাইটর মোঃ নুরুল হুদা।

কমলনগর চরপাগলা চরলরেঞ্জ মেইন রোডের পূর্ব প|শে মেসার্স হাসেম ব্রিকস্ প্রোপাইটর আবদুল গনি সহ ভিবিন্ন এলাকায় অবাধে চলছে বিভিন্ন নামের বাংলা ব্রিকস্ ইট ভাটা কাঠ পোড়ানোর এসব ইটভাটার মালিকদের সাথে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে কেহ জানান ছাড়পত্র প্রক্রিয়াধীন আছে। আবার কেহ বলে ছাড়পত্র পেয়েছি। পরিবেশের ক্ষতি বা দুষন যেন না হয় সে জন্য অধিদপ্তর ছাড়পত্র দেয় ব্রয়লার অথবা জিকজাক ইটভাটা স্থাপনের জন্য। কিন্তু যারা ছাড়পত্র পেয়েছে বললেন তারা কিভাবে বাংলা ইটভাটা স্থাপন করেছে, আর যাদের ছাড়পত্র বললেন প্রক্রিয়াধীন আছে তারা কিভাবে বাংলা ইটভাটা স্থাপন করেছে? এসব প্রশ্নের জবাব কোন মালিকপক্ষ না দিয়ে জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন এসব ইট ভাটা পরিদর্শন করে যায়, তাতে কোন অসুবিধা হয়না। যদিও ১৯৯৫ইং সালের পরিবেশ সংরক্ষন আইন প্রণয়ন করা আছে, কিন্তু উৎকোচ বিনিময় প্রথা চালু থাকার কারণে এসব আইনের কোন কার্যকারিতা নেই। অথচ এই আইনে পরিবেশ দূষনকারীদের জন্য কারাদন্ড ও অর্থদন্ডেরও বিধান আছে।

তাই এলাকাবাসীর দাবী পরিবেশ বিপর্যয় হতে রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। অন্যদিকে বাংলা চিমনি যুক্ত ইটভাটার কিছু কিছু মালিক দলীয় প্রভাব ও জনপ্রতিনিধির প্রভাব খাটিয়ে পরিবেশ আইনকে তোয়াক্কা না করে চালিয়ে যাচ্ছে যমজমাট ইট তৈরীর মহোৎসব। যেমন: আঁধার মানিক এলাকার মেসার্স খোরশেদ আলম এন্ড হুমায়ুন ব্রিকস্ ইট ভাটার মালিক হুমায়ন ও খোরশেদ। তিনি আওমালীগের সমর্থিত নেতা বিধায় তার প্রভাব খাটিয়ে এই দুইটি পৃথক পৃথক স্থানে ইট ভাটা গড়েছে। এ ছাড়াও বর্তমানে ওই এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করলে দেখা যাবে যে, এ নিউজের বাস্তবতা। পরবর্তী সংখ্যা থাকবে আরো অন্যান্য ব্রিকস্ এর সংবাদের চিত্র নিয়ে।

Spread the love

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ



Design & Developed by Md Abdur Rashid, Mobile: 01720541362, Email:arashid882003@gmail.com