৯:২১ অপরাহ্ণ, অক্টো ০২, ২০১৯
প্রবাহ রিপোর্ট : লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার ইউনিয়ন ও কমলনগর উপজেলার পাটারিরহাট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রবাহমান জারিরদোনা খাল। ওই দুই ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রতিদিন জীবন-জীবিকা নির্বাহের তাগিদে চলাচলে খালটি পাড়ি দিতেই হয়। এসব মানুষের চলচলে এটি ভিন্ন বিকল্প কোন উপায়ও নেই।
এতে দুর্ভোগের শেষ নেই এসব মানুষের। অথচ দীর্ঘ দেড় যুগেরও বেশি সময় দাবী জানিয়ে আসলেও এখানে নির্মাণ হয়নি ব্রীজ। বছরের পর বছর স্থানীয়দের অর্থায়নে নির্মিত সাঁকো দিয়েই পারাপার হয় লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর, এই দুই উপজেলার হাজারো বাসিন্দা। আবার দুই-চার মাস পরপর নিজেদের অর্থায়নে সেটি মেরামতও করেন স্থানীয়রাই। এভাবে চলছে বছরের পর বছর।
সম্প্রতি ফের নড়বড়ে হয়ে পড়েছে সাঁকোটি। মেরামত জরুরি; এবার পথচারীদের কাছ টাকা তুলে করা হবে সেটি মেরামত। বিগত কিছুদিন ধরেই সাঁকো পারাপারে টাকা আদায় করা হচ্ছে।
ঝুঁকি নিয়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরও পার হতে হয় নড়বড়ে সাঁকো। এভাবেই বছরের পর বছর জোড়াতালি দেওয়া সাঁকো দিয়ে চলাচল করে আসলেও ব্রীজ নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। সাঁকো মেরামতে পথচারীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে অর্থ।গত দেড় বছর আগে সাঁকোটি ভেঙে খালে পড়ে যায়। পরে আলেকজান্ডার ও পাটোয়ারিরহাট ইউনিয়নের সচেতন লোকজন উদ্যোগ নিয়ে বাজারের ব্যবসায়ী ও গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে ফের নির্মাণ করেন এটি। বাঁশ-কাঠ খুলে পড়লে, নষ্ট হলে স্থানীয়রাই এটি মেরামত করে থাকেন।
বিগত কিছুদিন থেকে সাঁকোটি ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। তবে খাল পারাপারে বিকল্প ব্যবস্থা নেই। এমন পরিস্থিতিতে পারাপার হতে এখন সাঁকোটির জরুরি মেরামত প্রয়োজন। উপায়ান্ত না পেয়ে সাঁকো মেরামতের জন্য এলাকাবাসী একেকজন পথচারী পার হতে পাঁচ টাকা করে আদায় করছেন। এভাবে ১০দিন টাকা তুলে সাঁকো মেরামত করবে এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা বলেছেন, বারবার ক্ষমতা ও জনপ্রতিনিধি পরিবর্তন হলেও তাদের ভাগ্যে পরির্বতন হয়নি। তাদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। তাদের দুঃখ-কষ্ট দেখার যেন কেউ নেই। জনপ্রতিনিধিরা দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন। সাঁকো মেরামতে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা কিংবা জনপ্রতিনিধি কেউই এগিয়ে আসেনি। মেলেনি সরকারি কোনো বরাদ্দও। যে কারণে পাটোয়ারিরহাট বাজার কমিটি, মসজিদ কমিটি ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বৈঠক করে জরুরিভিত্তিতে সাঁকো মেরামতের উদ্যোগ নেয়। সেটি মেরামতের জন্যই পথচারীদের কাছ থেকে পাঁচ টাকা করে সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত হয়।
স্থানীয় পাটারিরহাট বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন মাস্টার ও মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার হারুন পাটোওয়ারী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, সাঁকোটি ভেঙে পড়লে দুই উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম কমে যাবে। ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হবে, শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় যেতে পারবেনা। ওই কারণেই আগামী ১০ দিন সাঁকো পারাপারে পথচারীদের কাছ থেকে পাঁচ টাকা করে নেওয়া হবে। ওই টাকা দিয়ে মেরামত করা হবে সাঁকো।
কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাটারিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রাজু বলেন, ওই খালের ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, সাঁকো মেরামতের বিষয়ে কেউ আমাকে জানায়নি। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে মেরামতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, মে ১৩, ২০২৩
১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ, মে ১২, ২০২৩