১১:১৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টে ২৯, ২০২২
নিজস্ব প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দাসের হাট পুলিশ ফাঁড়ির ৫শ গজ দূরে স্থানীয় আব্দুর রবের একতলা পাকা ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে মালামাল লুটে নেয় মুখোশধারী ৮-১০ জনের ডাকাতদল। এ ঘটনায় থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে চুরির (নং-১৪, তাং ২৪/০৯/২০২২), ডাকাতির ঘটনায় চুরির মামলা নেয়ায় বাদী পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অসন্তোষ।
গত শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে এ ঘটনাটি ঘটে। আবদুর রব সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়নের পূর্ব সৈয়দপুর গাইন বাড়ির মৃত আব্দুল হকের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, রাত আনুমানিক ২.৩০ ঘটিকার দিকে ঘরে লোকজনের পায়ের শব্দ এবং আলমীরা ও আসবাবপত্রের টুংটাং শব্দে বাদীর ঘুম ভেঙ্গে যায়। পরে বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে দেখতে পায় ঘরের সামনের দরজা ও আলমীরার দরজা খোলা। এসময় তার শৌর- চিৎকার করিলে তার স্ত্রী মরিয়ম বেগম ও তার পুত্রবধূ আনিকা ফেরদৌস এর ঘুম ভেঙ্গে যায়। এসময় ৩/৪ জন লোককে ঘরের ভিতর হইতে তাড়াহুড়ো করে চলে যাইতে দেখে। চোরেরা ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার আনুমানিক মূল্য ৩ লক্ষ টাকা ও নগদ ২ লক্ষ টাকা ও ৬ টি মোবাইল আনুমানিক মূল্য ৪১ হাজার টাকা , সর্বমোট ৫ লক্ষ ৪১ হাজার টাকার মালামাল চুরি করিয়া নিয়ে যায়। চোরেরা ঘরের দরজার ছিটকিনি শক্ত লোহার বস্তু দিয়া দরজার চৌকাঠে চাপ দিয়ে চৌকাঠ হইতে দরজার ছিটকিনি আলাদা করিয়া চোরেরা ঘরে প্রবেশ করে।
সরজমিনে ও মুঠোফোনে আবদুর রব জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে দরজা ভাঙার শব্দ শুনে ঘুম থেকে উঠে দরজার দিকে গেলে ৩/৪ জন এসে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার হাত-পা ও চোখ বেঁধে ফেলে। এসময় তার স্ত্রী মরিয়ম বেগম ও পূত্রবধু আনিকা ফেরদৌসকেও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্ণালঙ্কার , মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় ডাকাতি মামলা করার জন্য হাতে লিখে দেন তিনি। লেখা দেখে থানায় কম্পিউটারে টাইপ করে এজাহারে স্বাক্ষর নেয় তার। পরে সে জানতে পারে তার ডাকাতি মামলার স্থলে হয়েছে চুরির মামলা। এসময় তিনি আক্ষেপ করে বলেন আমি সহজ-সরল লোক, তাই এজাহার না পড়ে স্বাক্ষর দেয়াই আমার ভুল হয়েছে। আমি দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ন্যয় বিচার চাই।
মরিয়ম বেগম বলেন, ৮-১০ জনের ডাকাত দলের মধ্যে ১জনের নিকট পিস্তল ও অন্য সদস্যদের প্রত্যেকের নিকট ছিল দেশিয় ধারালো অস্ত্র। এসকল অস্ত্র দিয়ে তাদের জিম্মি করে ফেলে । এর আগে তারা দরজার অত্যাধুনিক হ্যাজবোল্ড ও ছিটকিনি ভেঙে ফেলে ঘরে ঢুকে। মাত্র ১ ঘন্টার মধ্যে ডাকাতি করে মালামাল লুট করে পালিয়ে যায় ডাকাত দল। তিনি জানান, যারা ডাকাতি করতে এসেছিল তাদের প্রত্যেকে মুখে কাপড় বেঁধে প্রবেশ করে। ডাকাতির ঘটনায় চুরির মামলা নেয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জনতা কলেজের উপাধ্যক্ষ (অবঃ) মোজাম্মেল হোসেন বলেন, তারা ভোরে এসে ডাকাতির ঘটনা শুনেছেন। ২০-২৫ জনের ডাকাত দল তাদের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পুরুষ লোকটিকে বেঁধে মহিলাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্ণালঙ্কার, টাকা পয়সা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।
চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ মোসলেহ উদ্দিন জানান, বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে চুরির ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।