৪:১১ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০২৩
জহিরুল ইসলাম টিটু: মানুষ যদি হয় মানুষের জন্য, জীবন যদি হয় জীবনের জন্য, তাহলে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডিউটি ডাক্তার কার জন্য? এমনটাই প্রশ্ন ছিল প্রত্যান্ত চরাঞ্চল থেকে সেবা নিতে আসা সাধারণ একজন মানুষের।
গত বুধবার (১০ই মে) ভোর সাড়ে তিনটার দিকে সূদুর চরবংশী হতে বুকভরা আশা নিয়ে অসুস্থ সহধর্মিণীকে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন মো: আবদুল মালেক। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে এসে দীর্ঘসময় অপেক্ষার পরও দেখা মেলেনি কর্তব্যরত ডিউটি ডাক্তার জুবায়েরর। উল্টো ডাক্তার বাসায় বসে সহকর্মীর মুঠোফোনে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে রেফার করে দেন। ডাক্তারের এমন সিদ্ধান্তে নিরুপায় হয়ে রোগীর স্বামী আবদুল মালেক মুঠোফোনে বিষয়টি অবহিত করলে সাথে সাথেই আমি হাসপাতালে ছুটে গিয়ে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জুবায়ের সাহেবের সাথে পরামর্শের জন্য তার মোবাইল নাম্বার চাই। কিন্তু, সহকর্মীরা আমাকে ডাক্তারের মোবাইল নাম্বার না দিয়ে বরং তাদের মোবাইল থেকে কথা বলিয়ে দেন সেই ডাক্তারের সাথে। তখন আমি ডাক্তার সাহেবকে সালাম দিয়ে রোগীর বর্তমান শারীরিক অবস্থা জানতে চাইলে তিনি আমাকে বলেন, আসলে উনার মেয়েলি সমস্যা তাই উনাকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে রেফার করেছি। এরপর আমি ডাক্তার সাহেবকে প্রশ্ন করলাম আপনি কি রোগীকে দেখেছেন? তিনি বললেন, না আমি দেখিনি। তবে, সহকর্মীরা যেভাবে বলেছে তাতেই আমি আন্দাজ করে নিয়েছি। তখন আমি বললাম যে, প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে এই রোগীকে কোন চিকিৎসা দিয়েছেন? তিনি বললেন না। আমি বললাম কেন? তিনি বললেন-উনার কয়েকটি পরীক্ষা লাগবে। পরীক্ষাগুলি দেখলেই আমি চিকিৎসা দিতে পারবো। এরপর আমি বললাম ঠিক আছে কি কি পরীক্ষা লাগবে বলেন-আমি এক্ষুনি যেকোনভাবে করিয়ে নেব।
এরপর তিনি আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইউরিন টেস্টসহ কয়েকটি টেস্টের কথা বললেন। আমি সেগুলি করিয়ে দিলাম। রিপোর্টগুলো নিয়ে আবদুল মালেক পূণরায় জরুরি বিভাগে গেলে তারা চিকিৎসা সেবা দেয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে-
এই সামান্য পরীক্ষার জন্যেই কি হুট করে সহজ সরল অসহায় মানুষগুলোকে যত্রতত্র রেফার করে হয়রানি করতে হবে? তাও আবার রোগী না দেখে বাসায় ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই? বাহ্ কি চমৎকার আমাদের চিকিৎসা সেবা!
লেখক
জহিরুল ইসলাম টিটু
রায়পুর,লক্ষ্মীপুর
১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, মে ১৩, ২০২৩