৪:২৩ অপরাহ্ণ, জানু ২৮, ২০২১
মো. নিজাম উদ্দিন : সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘রাস্তা করলে হবে না, রাস্তার মান ঠিক রাখতে হবে। রাস্তায় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। আমরা আজ অনেক উন্নয়ন করেছি, কিন্তু যতদিন সড়ক এবং পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরে না আসবে ততোদিন এসব উন্নয়ন স্নান হয়ে যাবে। শৃঙ্খলা ছাড়া উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই।’
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারী) সকালে লক্ষ্মীপুর জেলার সড়ক বিভাগের তিনটি প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মন্ত্রী হিসেবে কোন ঠিকাদার বা সড়ক থেকে কমিশন খাইনা, আমাদের কোন টাকা দিতে হয়না। আমার মন্ত্রণালয়ে এখন প্রমোশন বা বদলীর জন্য কোন প্রকার উৎকোচ বিনিময়ের নজির নেই। আগে ছিলো, আমি আসার পর সেটা বন্ধ করে দিয়েছি। আমি স্বচ্চতার সাথে কাজ করতে সতেষ্ট আছি। মন্ত্রীত্ব চিরজীবন থাকবে না, উল্টো যদি ভালো কিছু কাজ করতে পারি সততার সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বিশ্বে বাংলাদেশকে প্রশংশিত করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের অর্থ যেন জনগণের কাজে ব্যয় হয়, সেদিকে আপনাদের সকলকে খেয়াল রাখতে হবে। কাজ কোন অবস্থাতেই যেন নিন্ম মানের না হয়। একটা কাজ হলে বর্ষা এলে বৃষ্টির পর আর সে কাজ থাকে না। এরকম কাজের কোন মানে হয়না। সড়ক বিভাগ টেকসই ও উন্নতমানের কাজ করবে। যে কাজ ৬ মাস যায়না, সে কাজের প্রয়োজন নেই। সততার সহিত কাজ করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুষ্ঠ পরিকল্পনা করে কাজে হাত দিন। যাতে জনগণের ভোগান্তি না হয়। সড়কগুলোর কাজ ভালোভাবে করতে হবে। এ বিষয়ে আমি যেন কোন অভিযোগ না পাই। পাশাপাশি জনগণের কষ্ট লাগবে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে এগিয়ে আসতে হবে।’
মন্ত্রী দেশব্যাপী উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশব্যাপী উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চলছে। তার নেতৃত্বে সম্মৃদ্ধ আগামী নির্মানের যে পথচলা তা এগিয়ে নিতে দলমত নির্বিশেষে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নিজে নিজের অবস্থান থেকে সততা, কর্মনিষ্ঠা, দায়িত্বশীল কাজ করতে হবে- যাতে সোনার বাংলা রূপান্তরিত হয়। স্বাধীনতার চেতনায় মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে সুসমন্বত রেখে সাম্প্রাদায়িকতামুক্ত এটি গণতান্তিক দেশ রূপান্তরে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, ‘দল করলে দলের নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। দলের সুনাম নষ্ট হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। যারা করবে তাদের দল থেকে বের করে দেওয়া হবে। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দশটা উন্নয়ন কাজ স্নান হয়ে যায় একটা খারাপ কাজের জন্য, কাজেই কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না।’ বৃহত্তর নোয়াখালীর নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘নোয়াখালীর রাজনীতিকে সুনামের ধারা ফিরিয়ে আনতে হবে।’
তিনি কোনো ধরনের অপপ্রচারে কান না দিয়ে সংশয়মুক্ত হয়ে সবাইকে করোনা টিকা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামাল, জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ। ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন- সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুর সবুর ও কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শওকত আলী, নোয়াখালী সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুর রহিম।
লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত দত্তের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, সাধারণ সম্পাদক এড. নুর উদ্দিন চৌধুর নয়ন, পৌর মেয়র আবু তাহের, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহউদ্দিন টিপু প্রমুখ।
উল্লেখ্য, প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে লক্ষ্মীপুর পৌর এলাকার তেরবেকী সেতু, সদর উপজেলার মান্দারী-দাশের হাট সড়কের মান্দারী, দিঘলী ও রামগঞ্জের মন্ডলতলী সেতু এবং লক্ষ্মীপুর থেকে বরিশাল-ভোলা জাতীয় মহাসড়কের লক্ষ্মীপুর অংশে প্রায় একশ কোটি টাকা ব্যয়ে লক্ষ্মীপুর-মজুচৌধুরীর হাট মহা সড়কের সাড়ে ১০ কি. মি. ৪ লেনে প্রশস্তকরণ ও ৩৬৯৪২.৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে লক্ষ্মীপুর শহরের ৩.৬৫ কি. মি. সংযোগ সড়কের ৪ লেনে উন্নীত করণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।