১১:৩৬ অপরাহ্ণ, নভে ০৯, ২০১৯
নিজস্ব প্রতিনিধি :
ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে বিপন্ন আবহাওয়ার ক্রান্তিলগ্নে উদ্বিগ্ন দেশবাসী।আশংকাজনক ক্ষয়ক্ষতি থেকে জনপদকে রক্ষা করতে সরকারসহ মরিয়া সংশ্লিষ্ট সকলেই। উপকূলীয় জেলা-উপজেলায় দুর্যোগ মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন প্রস্তুতিমূলক সভা ও প্রচার-প্রচারণাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। অনুরুপ অবস্থানে রয়েছে লক্ষ্মীপুর জেলা-উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে বৈরি আবহাওয়ার চরম এই পরিস্থিতিতে কর্মকান্ডতো দূরের কথা সশরীরেই দেখা মেলছেনা রামগতি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সোহরাব হোসেনের। এনিয়ে খোদ প্রশাসন এবং স্থানীয়দের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে রামগতিতে বিপুল অর্থ ব্যয়ে নির্মিত আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র ও দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের পিছনে ব্যয়ীত অর্থ গচ্ছা দিচ্ছে কি সরকার?
প্রসঙ্গত :
উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর স্থানীয় আবহাওয়া বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণের জন্য লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার ইউনিয়নের চর সেকান্তর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয় ১ম শ্রেনীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষনাগার। ২০০২ সালে স্থানীয়দের দান করা দেড় একর ভূমির ওপর সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধীনে এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে প্রতিষ্ঠানটির আধুনিকায়ন করা হয়।
কিন্তু স্থানীয়দের প্রশ্ন রামগতির আবহওয়া কেন্দ্রটি লক্ষ্মীপুরবাসীর কি কাজে লাগে ? দেখা নেই কর্মকর্তার…
কেন্দ্রটিতে লোকবল নিয়োগ, দুটি ভবন নির্মাণ এবং যন্ত্রপাতি সবই স্থাপন করা হয়েছে। ২জন কর্মকর্তা ও ২ জন আনসার সদস্য অফিসের কাগজপত্রে কর্মরত রয়েছে। কর্মরত কর্মকর্তারা জানান কেন্দ্রটি গত ২০১৭ সালে চালু হয়েছে।
প্রশাসন এবং জেলার অনেক গণমাধ্যমও জানে না যে লক্ষ্মীপুরে একটি সচল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্র রয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, সরকারের বিপুল ব্যয়ে নির্মিত এ প্রতিষ্ঠান থেকে আজ পর্যন্ত কোন জনগণ বা জেলেরা কোন ধরনের সেবা পায়নি। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেছেন, তথ্য না পাওয়ার প্রধান কারণ আনসার সদস্য ছাড়া অন্য যে ২ জন কর্মকর্তা কর্মরত রয়েছেন তারা কর্মস্থলে থাকেন না । কর্মকর্তারা অফিস করেন না, কালে-ভদ্রে কি কারণে যেন আসেন।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে লক্ষ্মীপুরসহ উপকূলীয় অঞ্চলে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত জারি হওয়ায় পর এ সংক্রান্ত কিছু তথ্য জানার জন্য শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে এ অফিসে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর একজন আনসার সদস্য ছাড়া অন্য কাউকে দেখা যায়নি। পরে এ অফিসের প্রধান কর্মকর্তা সিনিয়র ওয়েদার অবজারভার মোঃ সোহরাব হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ঢাকায় রয়েছেন বলে জানান।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এগিয়ে আসায় সরকার শুক্রবার এক অফিস আদেশে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সরকারের ২৮ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থল ত্যাগ না করতে নির্দেশ দিয়ে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করেছে।
জানা যায়, অফিসে লোকবল হিসেবে রয়েছে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিনিয়র ওয়েদার অবজারভার ১ জন এবং বেলুন মেকার-১ জন গার্ড-২ জন (আনসার)।
এ অফিসের অনুমোদিত জনবল মোট ৯জন। যাদের মধ্যে আবহাওয়া সহকারী- ১জন, সিনিয়র অবজারভাইজার-১ জন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-২ জন, বেলুন মেকার-১ জন এবং গার্ড-৪ জন।
আনসার সদস্য মোঃ ছালা উদ্দিন জানান, এ অফিসে স্থাপিত যন্ত্রপাতিগুলোর মধ্যে রয়েছে বেলুনমিটার, উইন্ডরান, ডিজিটাল বেরোমিটার(রেইনগ্যাজ), অত্যাধুনিক কম্পিউটার, ড্রাই বাল্ব, ওয়েট বাল্ব, থার্মোমিটার ইন্ডিকেটর।
দূর্যোগের সময় কোন ধরনের কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন এমন প্রশ্নে প্রধান কর্মকর্তা সিনিয়র ওয়েদার অবজারভার মোঃ সোহরাব হোসেন সদুত্তর দিতে পারেননি।
১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, মে ১৩, ২০২৩