১২:২০ পূর্বাহ্ণ, মে ২৯, ২০১৯
মো. নিজাম উদ্দিন : বৃদ্ধ দিন মজুর আমির হোসেনের স্বপ্ন ছিলো একদিন তার ঘরটি বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে। এখন তার স্বপ্নটি বাস্তবে রুপ নিলো। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী “শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” প্রকল্পের আওতায় এখন তার ঘরে বিদ্যুতের বাতি জ¦লছে। আমির হোসেনের মতো একই স্বপ্ন দেখেছেন কৃষক জালাল ডালি, মো. লিটন, হুমায়ূন পাটারী, জেলে লোকমান হোসেন ও সফিক মাঝিসহ অনেকে। আজ তারাও বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করছেন। বৈদ্যুতিক লাইটের পাশাপাশি তাদের অনেকের ঘরে এখন ফ্যানও ঘুরছে। গত সোমবার লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির “আলোর ফেরিওয়ালা”র মাধ্যমে চর আলী হাসান গ্রামের ৭৪ জন গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়। ওই এলাকার আরও প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাহক আপেক্ষায় আছে বিদ্যুৎ সুবধিার আওতায় আসতে। পর্যায়ক্রমে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেও তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মেঘনার উপকূলীয় এলাকা চর রমনী মোহন ইউনিয়নের চর আলী হাসান গ্রাম। গ্রামটিতে বেশির ভাগ নি¤œভিত্ত আয়ের মানুষের বসবাস। সাধারণত জেলে, কৃষক এবং দিনমজুরী পোশা এদের আয়ের উৎস্য। অনুন্নত রাস্তাঘাট এবং বিভিন্ন নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত এ এলাকার বাসিন্দারা। তবে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে “ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” প্রকল্পের আওতায় গ্রামবাসী এখন বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় অন্তভূক্ত হয়েছে। ফলে গ্রামটির বেশিরভাগ অংশ বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন জানান, দীর্ঘদিন থেকে এলাকার মানুষের স্বপ্ন ছিলো এলাকায় বিদ্যুতের লাইন আসবে আর তারা বিদ্যুৎ সংযোগ পাবে। অতীতে বিদ্যুতের ঘাটতি থাকার কারণে নতুন করে কোন বিদুতের লাইন নির্মাণ করা হয়নি এবং সংযোগও প্রাদন করা হয়নি। কিন্ত বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দিতে উদ্যোগ নিয়েছে। সেই লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কাজ করে যাচ্ছে।
সাইজ উদ্দিন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এখন আমরা বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছি। সরকারের এ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। ঘরে বিদ্যুৎ থাকায় আমাদের জীবন যাত্রার মান কিছুটা উন্নত হয়েছে। আগে ছেলেমেয়েদের লোখাপড়ায় খুব অসুবিধে হতো। কিন্তু বিদ্যুৎ আসার পর তারা এখন স্বাচ্ছন্দ্যে লেখাপড়া করতেছে।’’
স্থানীয় কৃষক আবু মোল্লা জানান, রমজান মাসে বিদ্যুৎ সুবিধায় আসতে পেরে এলাকার মানুষ অনেক খুশি।
নিজাম উদ্দিন নামে এক বিদ্যুৎ প্রতাশী গ্রাহক বলেন, ‘‘একই লটের আওতায় তিনিসহ আরও প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসতে পারেননি। এর মধ্যে একটি মসজিদ, একটি মাদ্রাসা ও একটি প্রাথমকি বিদ্যালয়ও রয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের ঘরগুলোতে ওয়ারিং এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে।’’ তাদের ওয়ারিং পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা নিয়ে “আলোর ফেরিওয়ালা”র মাধ্যমে সংযোগ প্রদানের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
স্থানীয় মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক নুর হোসেন বলেন, ‘‘রমজানে মসজিদে নামাজের সময় অনেক মুসুল্লী উপস্থিত হয়। গরমের কারণে নামাজ পড়তে তাদের কিছুটা কষ্ট হয়। মসজিদে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলে কষ্ট কিছুটা লাগব হতো।’’
লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. শাহজাহান কবির জানান, ‘‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’’ সম্পূর্ণ সরকারী অর্থ এবং হয়রানিমুক্তভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি ঘরে শতভাগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ করছে যাচ্ছে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি মাসে আমরা ৫-৬ হাজার মিটার সংযোগ প্রদান করে থাকি। যে কোন গ্রাহক চাইলেই খুব সহজেই বিদ্যুতের সংযোগ নিতে পারে। এছাড়া নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে আমাদের পুরো ইউনিট সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে।’’
১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, মে ১৩, ২০২৩
১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ, মে ১২, ২০২৩