১০:১৩ অপরাহ্ণ, এপ্রি ০২, ২০২০
নিজস্ব প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুরের কুশাখালীর উত্তর চিলাদী গ্রামে একটি ফলজ বাগানের শতাধিক ফলজ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। বুধবার সকালে ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটায় শাহজাহান ও শাহ আলম নামে দুই ভাই। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিকার চেয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে জমির মালিক মো. ইব্রাহিম।
জানা গেছে, চিলাদী গ্রামের জাফর আহম্মদের পুত্র মো. ইব্রাহিম ও আবদুল কাদের খরিদ সূত্রে ২৭ শতাংশ জমির মালিক। কয়েক বছর আগে ওই জমিতে আম, নারিকেল, কমলা, নারিকেল, সুপারী গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গ্রাছ রোপন করেন জাফরের পুত্র ইব্রাহিম। এছাড়া বিভিন্ন সবজির চাষও করেন তিনি। এগুলো রক্ষণা বেক্ষণের জন্য সেখানে একটি ঘরও নির্মাণ করা হয়।
ইব্রাহিম জানান, তাদের খরিদকৃত জমির ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে একই এলাকার মৃত আতরের জামানের দুই পুত্র শাহজাহান (৫০), শাহ আলম (৪৫) ও আমিন উল্যার পুত্র ইব্রাহিম (৬৫)। তিনি শাহজাহানের ভগ্নিপতি। জমিটি নিজেদের দাবি করে বিভিন্ন সময়ে তাদের হয়রানি করে আসছেন বলে জানান জাফরের পুত্র ইব্রাহিম।
তিনি জানান, বুধবার ওই জমিতে কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে কাজ করাচ্ছিলেন। এসময় একদল লোক এসে তার জমিতে তান্ডব চালায়। ভয়ে তিনি সেখান থেকে সরে যান।
স্থানীয় লোকজন প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাশ্ববর্তী দিঘলী ইউনিয়নের একটি সন্ত্রাসী বাহিনীকে ভাড়া করেন শাহজাহান। বুধবার সকালে ২০-৩০ জনের ওই বাহিনী হাতে দা এবং লাঠি হাতে তাদের গ্রামে এসে ইব্রাহিমের জমিতে তান্ডব চালায়। এ সময় সেখানে থাকা শতাধিক ফলজ গাছ কেটে সেখানে থাকা একটি ঘরে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেন তারা। এছাড়া ক্ষেতে থাকা বিভিন্ন সবজি লুটে নেন হামলাকারীরা। তারা শাহ আলম, শাহজাহান ও ইব্রাহিম, ইউনুস ও আবদুর রহিমের নেতৃত্বে এস এ কর্মকান্ড চালিয়েছে।
‘‘হামলাকারীদের হাতে ধারালো দা এবং লাঠি ছিলো। আমরা কেউ ভয়ে তাদের বাধা দিইনি। এছাড়া যারা আসছিলো তারা খুব খারাপ প্রকৃতির লোক। তাদের কাজ হলো মানুষের জমি বেদখলে সহযোগীতা করা। তারা পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের চিহিৃত সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য। তাদের দিয়ে সবই সম্ভব। প্রতিবাদ করলে জীবনাশের আশঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা কেউ এগিয়ে আসিনি। আশাকরি প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে এলাকাবাসীকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করবে। না হলে তারা আমাদের শান্তি দিবে না।’’ -বললেন চিলাদী গ্রামের আতঙ্কগ্রস্ত কয়েকজন এলাকাবাসী।
শাহজাহানের বিষয়ে এলাকাবাসী বলেন, শাহজাহান খারাপ প্রকৃতির লোক। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে। এলাকায় শালিশের নামে মানুষকে হয়রানি করে সে। তার দেওয়া শালিশি রায় না মানলে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে অত্যাচার করে শাহজাহান। এলাকায় অর্থের বিনিময়ে শালিশ বাণিজ্য করে সে। তার মেয়ে এবং স্ত্রীর ওপর অত্যাচার করার অভিযোগে থানায় মামলাও আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহজাহান স্ত্রী এবং চার সন্তানকে রেখে গোপনে একটি বিয়ে করে। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রথম স্ত্রী এবং সন্তানদের নির্যাতন করে। এ ঘটনায় তার মেয়ে বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করে।
অভিযোগের বিষয়ে শাহজাহানকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ভাই শাহ আলম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তারা গাছ কাটেনি বরং তাদের প্রতিপক্ষ গাছ কেটে তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। তবে ওই জমি তাদের এবং সুপারী-নারিকেলসহ ফলজ গাছ তাদের বলেও দাবী করেন শাহ আলম।
এ ব্যাপারে চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, ভূক্তভোগীরা অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৩:১০ অপরাহ্ণ, জানু ২৬, ২০২১