• ঢাকা,বাংলাদেশ
  • বুধবার | ৩১শে মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | গ্রীষ্মকাল | রাত ৪:০৩
  • আর্কাইভ

চাল নিয়ে চেয়ারম্যান ছৈয়ালের চালবাজি : জেলেদের ক্ষোভ

৯:১৬ অপরাহ্ণ, এপ্রি ১৩, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক :  লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর রমনী মোহন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু ইউছুফ ছৈয়ালের বিরুদ্ধে জেলেদের চাল আত্নসাত, ওজনে কম দেওয়া ও টাকার বিনিময়ে জেলেদের নাম তালিকাভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় জেলেদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের সঙ্গে প্রকৃত জেলেদের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।

জেলেদের সঠিক তালিকা না হওয়ায় এবং যথাযথভাবে চাল বিতরণ না করায় জেলেরা দিনরাত মেঘনায় মাছ শিকার করছেন। এতে সরকারের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ব্যবহত হচ্ছে। এদিকে সুবিধা লুটছেন চেয়ারম্যানসহ তার লোকজন।

জাটকা রক্ষা ও মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা অর্থাৎ, ১০ ইঞ্চির কম সাইজের ইলিশ নিধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এ ছাড়া ইলিশ অভয়াশ্রম হিসেবে চিহ্নিত উপকূলীয় এলাকার ৪৩২ বর্গকিলোমিটার নদীতে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত টানা দুই মাস সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকে। এ সময়কে কেন্দ্র করে প্রণোদনা হিসেবে প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে ৪ মাসে ১৬০ কেজি চাল দেওয়া হয় জেলেদের। মৎস্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় ভিজিএফ প্রকল্পের আওতায় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে।

চেয়ারম্যান ছৈয়াল এপ্রিলের শুরুর দিকে মাত্র ১ মাসের চাল দিয়েছেন। তবে ৪০ কেজি করে দেওয়ার কথা থাকলে দিয়েছেন মাত্র ২৪/২৫ কেজি । ওজনে কম দেওয়ার ঘটনায় চাল বিতরণকালে চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের সঙ্গে একাধিকবার বাকবিতণ্ডা হয়েছে জেলেদের। এনিয়ে জেলেদের মধ্য চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

চর রমনী মোহন ইউনিয়নের ২ হাজার ৪৬০ জেলের তালিকা দিয়েছেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছৈয়াল। এদের জন্য বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে ৩৯৩ টন চাল। যার বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এসব চাল জেলেদের মধ্য বিতরণ করার কথা থাকলেও তা যথাযথভাবে বিতরণ করা হচ্ছে না। চেয়ারম্যান চাল নিয়ে করছেন চালবাজি।

অভিযোগ রয়েছে, প্রকৃত জেলেদের নাম বাদ দিয়ে  ‘গায়েবি’ তালিকা করে জমা দিয়েছেন তিনি।  নিজস্ব লোকজন ছাড়া অন্য জেলেদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন এক হাজার টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা। এভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

তালিকা অনুসন্ধন করে দেখা গেছে, ওই তালিকায় প্রকৃত জেলেরা নেই। আছেন তার নিকট আত্নীয়সহ তার নিজস্ব লোকজন। ওই সময় তালিকা তৈরীর অনিয়মে বাধা দেওয়ায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে চেয়ারম্যানের কাথাকাটি ও বাকবিতণ্ডার ঘটনাও ঘটেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকজন জেলে জানিয়েছেন, তারা প্রকৃত জেলে কিন্তু তারা চেয়ারম্যানের ভোট না করায় তাদেরকে তালিকাভুক্ত করা হয়নি।

আরও কয়েকজন জেলে জানিয়েছেন ওজনে চাল কম দেওয়া হয়েছে তাদের। ৪০ কেজির স্থলে দিয়েছে ২৪ কেজি।

সচেতন মহল বলছেন তালিকাভুক্ত প্রতি জেলে ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত চার মাস ৪০ কেজি করে মোট ৪মণ চাল পাওয়ার কথা। দেওয়া হয়েছে এক কিস্তি এখনো তিন কিস্তি দেওয়ার বাকি। এদিকে নিষেজ্ঞা উঠতে আর বাকী ১৬দিন। মে মাসের ০১ তারিখ থেকে জেলেরা ফের নদীতে মাছ শিকারে যাবেন। তখন বাকী তিন কিস্তির চাল আত্নসাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গত বছরও একইভাবে চাল নিয়ে চালবাজি করার অভিযোগ উঠে।

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান আবু ইউছুফ ছৈয়ালের কাছে জনতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দেননি।

Spread the love

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ



Design & Developed by Md Abdur Rashid, Mobile: 01720541362, Email:arashid882003@gmail.com