৯:৪৮ অপরাহ্ণ, নভে ০৭, ২০১৯
নিজস্ব প্রতিবেদক : জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা দাবীর অভিযোগে চররমনী মোহন ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ ছৈয়ালের নামে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী (সদর) আদালতে ভুক্তভোগী জেলে শাহজাহান মোল্লা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এতে ওই চেয়ারম্যানসহ ১০ জনের নাম উল্লেখপূর্বক ২০/২৫ জনকে আসামী করা হয়।
আদালতের বিচারক আবদুল কাদের মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক আগামী ১৪ জানুয়ারী প্রতিবেদন দাখিলের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন। এর আগে গত সোমবার (৪ নভেম্বর) লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনিক বিভিন্ন দফতরে শাহজালাল মোল্লা নামের ওই জেলে ইউপি চেয়ারম্যান ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন।
বৃহস্পতিবার আদালতে দায়েরকৃত মামলার অন্য আসামীরা হলেন, ওই ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে ইয়াকুব ছৈয়াল, কাজল ছৈয়াল, মৃত হামিদ সর্দারের ছেলে জিল্লাল সদ্দার, হামিদ ভূঁইয়ার ছেলে ফিরোজ, এহাকের ছেলে অনু, স্থানীয় সালা আহম্মদ, এছাহাক বন্দুসির ছেলে সাদ্দাম, মৃত- কাশেম মিরের ছেলে ইলিয়াছ, আমিন হোসেনের ছেলে এমরান। তারা সবাই একই ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং চেয়ারম্যানের অনুসারী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার উত্তর চর রমনী মোহন হতে হোলার চর, দিঘলা চর, পাতার চর, হটকের চর সহ নতুন মেঘা পর্যন্ত মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থানে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে ওই ইউনিয়নের জেলে সম্প্রদায়। সম্প্রতি মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে মাছ শিকার করতে গেলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ ছৈয়াল ও তার লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জেলেদের কাছে চর প্রতি ৩ লাখ টাকা হারে চাঁদা দাবী করে। দাবীকৃত চাঁদা না দিলে নদীতে মাছ ধরতে না দেওয়ার হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। এ ঘটনায় জেলেরা লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ওই ইউপি চেয়ারম্যান।
ঘটনার দিন শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে মেঘনা নদীর দিঘার চরের পশ্চিম পাড়ে জেলে শাহজাহান মোল্লাসহ কয়েকজন জেলে মাছ শিকারে যায়। এসময় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এক দল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে জেলেদের জিম্মি করে নৌকা প্রতি ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। দাবীকৃত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় জেলেদের বেদম মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যানের লোকজন দেড় লাখ টাকা মূল্যের মাছ ধরার জাল এবং ১ লাখ টাকা মূল্যের মাছ লুট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় দাবীকৃত চাঁদার টাকা না দিলে জেলেদের নদীতে মাছ শিকার করতে দেবে না বলে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন হুমকি ধমকি দেয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে নদীতে মাছ শিকারে যেতে না পারায় বর্তমানে কর্মহীন হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা। এ ঘটনার অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগের বিষয়ের জানতে চাইলে চররমনী মোহন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চাঁদা দাবীর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘মূলত শাহজাহান মোল্লাসহ কয়েকজন অবৈধভাবে মাছঘাট পরিচালনা করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে আমি তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দিই। তাই আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছে।’
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজিজুর রহমান মিয়া জানান, আদালতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবীর অভিযোগ তদন্তের আদেশ এখনও হাতে আসেনি। হাতে পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, মে ১৩, ২০২৩