৮:০০ অপরাহ্ণ, জানু ১০, ২০২১
মো. নিজাম উদ্দিন : লক্ষ্মীপুরের তেওয়ারীগঞ্জে অবৈভভাবে গড়ে উঠা সংসার এবং একতা নামে দুটি বাংলা ইটভাটার কার্যক্রম দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনিক অনুমোদন না থাকলেও বিভিন্ন দোহাই দিয়ে ওই দুটি ভাটাতে অবাধে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। এতে মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে ওই এলাকার পরিবেশ। এছাড়া ওই এলাকাতে বেশ কয়েকটি বয়লার ইটভাটাও গড়ে উঠেছে। এ সব ভাটায় আশপাশের ফসলি জমির মাটি দিয়ে ইট তৈরী করা হচ্ছে।
গেল বছর পরিবেশ দূষণের দায়ে সংসার ব্রিকস ও এইচবিএম নামে দুইটি ইটভাটা ভেঙে দেওয়া হলেও কয়েকদিনের মাথার সেগুলো পুনরায় কার্যক্রম শুরু করে। এ বছরও আইন ভঙ্গ করে চলছে ইটভাটার কার্যক্রম। শুধু তাই নয় ইট এবং মাটি পরিবহনের কাজে নিয়োজিত পাওয়ার টিলার আশপাশের কাঁচা-পাকা সড়কে বিনষ্ট করে ফেলেছে। আর অবাধে গাছের গুঁড়ি ব্যবহারের জন্য ভাটাতেই স্থাপন করা হয়েছে করাত কল।
একতা ইটভাটায় গাছের গুঁড়ি সাইজ করার জন্য ভাটার ভেতরে স্থাপন করা হয়েছে করাত কল। ছবি- কালের প্রবাহ
সরেজমিনে সংসার ব্রিক্স’ নামক বাংলা ইটভাটায় গিয়ে দেখা গেছে, ইট পোড়ানো কাছে গাছের গুঁড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া ভাটার বিভিন্নস্থানে স্তূপ করে রাখা হয়েছে গাছের গুঁড়ি। ভাটার মাটি পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি ট্রলিবাহী ট্রাক্টর (পাওয়ার ডিলার) পাশ্ববর্তী কাচা সড়ক বিনষ্ট করে ফেলেছে। এছাড়া ভাটার পেছনে রয়েছে স্থানীয় একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র। সেখানেও রোগীদের আসা কমে গেছে। রাস্তার অবস্থা একেবারে বেহাল হওয়ায় রোগীরা ওই পথ দিয়ে আসতে পারে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ট্রাক্টরগুলো অবাধে চলাচলের কারণে সড়কের অবস্থা একেবারে বেহাল হয়ে গেছে। ফলে অন্য যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রাস্তাগুলো। ভাটার নির্গত ধোঁয়ায় এলাকাবাসীর বসবাস বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আশপাশের গাছপালাও বিবর্ণ রূপ ধারণ করেছে। গাছে কোন ফলন এবং কৃষি জমিতে কোন ফসল হচ্ছে না। মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদও করছে না। তবে অবৈধ ভাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন বাসিন্দারা।
ওই এলাকার একতা ব্রিক্স’ এ গিয়ে দেখা গেছে, ভাটার ইট পোড়ানো কাজে ব্যবহৃত গাছের গুঁড়িকে সাইজ করতে ভাটার মধ্যেই স্থাপন করা হয়েছে করাত কল।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জের সংসার ইটভাটাতে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে বৃক্ষ। গত বছর ভাটায় অভিযান চালিয়ে কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় প্রশাসন। ছবি- কালের প্রবাহ
সংসার ভাটার মালিকের ভাই রুবেল সানি বলেন, বাংলা ভাটার কার্যক্রম চালানোর জন্য উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করা হয়েছে। দু’একদিনে মধ্যে তাদের হাতে রিটের কাগজ চলে আসবে। তাই ভাটা পরিচালনা করতে তাদের আর কোন সমস্যা হবে না। গেল বছর পরিবশে অধিদফতর কর্তৃক ভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, পরিবেশ অধিদফর তাদের ভাটার কার্যক্রম বন্ধ করেনি। তারা শুধু জরিমানা করেছে।
একতা ব্রিক্স’র মালিক ইউসুফ বলেন, উচ্চ আদালতে আদেশে আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করি। আমাদের কাগজপত্র আছে।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অচিরেই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ সম্প্রতি সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় সভায় এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ বিষয়ে কোন আপস নেই। বিশেষ করে ড্রাম (বাংলা) চিমনীর ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৯:২০ অপরাহ্ণ, জানু ১১, ২০২১
৬:৫৯ অপরাহ্ণ, জানু ১০, ২০২১